জুমার খুতবা। সফর মাস ১ম জুমা। পৃথিবীর ভয়ংকর চোর ঈমান চোর।
সফর মাসের ১ম খুতবা
ঈমানের হেফাজত,
কি কাজ করলে ঈমান মজবুত হয়,
কি কাজ করলে ঈমান দুর্বল হয়
সম্মানিত মুসল্লী
বৃন্দ মানুষ কোন জিনিষ যতই মুল্যবান তা তত বেশী গুরুত্ব সহকারে হেফাজত করে। মসজিদে আসলে হাওয়াই চপ্পল বাহিরে রেখে আসে কিন্তু দামী চামড়ার জুতা হলে তা ভিতরে এনে বক্সে রেখে দেয়। তেমনি বাই সাইকেল হলে তালা ছাড়া বাহিরে রেখে দেয়, কিন্তু নতুন
মোটর সাইকেল হলে তা মজবুত তালা দিয়ে হেফাজত করে। জিনিষের মূল্য যতই বাড়তে থাকে আমরা সে জিনিষের সিকিউরিটির ব্যবস্থা তত মজবুত ভাবে করি। এটাই হল মানুষের অভ্যাস।
সবচেয়ে দামী জিনিষ কি?
এবার আমি
আপনাদের কাছে প্রশ্ন করতে চাই আমাদের জীবনে আমাদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান জিনিষ কি?
সন্তান? স্ত্রী? মা? বাবা?
টাকা পয়সা? জায়গা জমি? স্বণ রৌপ্য? এসব কি সবচেয়ে মূল্যবান? উত্তর হবে না, একজন মুসলমানের
জন্য সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হল তাঁর ঈমান।
ঈমানের দাম কত?
ঈমানের দাম
আমি এভাবে বলি দুনিয়ার সমস্ত দামী দামী বস্তু স্বর্ণ, ডায়মন্ড, রুপা, টাকা পয়সা সব কিছু এক পাশে রাখা হল আর এক পাশে রাখা হয় ঈমান, তাহলে একজন মুসলমানের জন্য দুনিয়ার সব কিছু থেকে ঈমানই দামী হবে।
ঈমান কেন দামী?
কারন দুনিয়ায়
একজন লোক কোটি কোটি টাকার মালিক গাড়ী বাড়ী, ধন দৌলত, টাকা পয়সার কোন অভাব নাই, কিন্তু তার
কাছে যদি ঈমান নামক দৌলত না থাকে তাহলে তার জন্য রয়েছে আবাদুল আবাদ এর জন্য জাহান্নাম (হুম ফিহা খালিদুন) শত বছর, হাজার বছর
নয় বরং সে আযাবের শেষ নাই, পক্ষান্তরে যে
ঈমান নিয়ে দুনিয়া থেকে যাবে সে যদিও গুনাহগার হয় তবুও এ ঈমানের কারনে
একদিন না একদিন তাঁর জন্য জান্নাতের দরজা খোলা হবে।
ঈমান কিভাবে বরবাদ হয়?
যে ঈমান
এতই দামী সে ঈমান কিভাবে হেফাজতে থাকবে সে বিষয়ে আমাদের কোন জ্ঞানও নাই এবং সে বিষয়ে শিখার আগ্রহও আমাদের নাই। অথচ আপনার আখেরাতের সুখ কোটি কোটি বছরের সুখ শান্তি এর উপরই নির্ভরশীল, এখন আপনি যদি না জেনে অজ্ঞানতার কারনে নিজের ঈমানকে নষ্ট করে ফেলেন তখন আপনার কি হবে? আখেরাতে আফসোস
শত আফসোস ছাড়া আপনার জন্য আর কোন পথ থাকবে না।
আফসোসের ঘটনা উদাহারণঃ
একটা ঘটনা
বললে আপনাদের বুঝতে সহজ হবে, এক লোক
তাঁর মেয়ের বয়স যখন ৭ বছর তখন
থেকেই বড় একটা মাটির ব্যাংক কিনে আনল আর সে মাটির ব্যাংকে সে প্রতিদিন তার কামাই রুজি থেকে ১শত টাকা জমা রাখে, কারন যখন তার মেয়ের বিয়ের বয়স হবে তখন মেয়ের বিয়েতে সে এ টাকা খরচ
করতে পারবে, এভাবে ১৫ বছর পর্যন্ত লোকটি নিজের কামাই রুজি থেকে ১০০ টাকা করে ব্যাংকে জমা করতে থাকে, মেয়ের বয়স যখন ২১ বছর তখন মেয়ের বিয়ে ঠিক হল লোকটি মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে বিগত ১৫ বছর যাবত ব্যাংকে জমানো টাকা
বের
করার জন্য যখন ব্যাংকটি ভাঙ্গল সে যে চিত্র দেখল তাতে তার হার্ট এটাক হওয়ার অবস্থা, সে দেখল সে মাটির ব্যাংকে বিগত ১৫ বছর যাবত সে যত টাকা জমা করেছে সব গুলি টাকা উই পোকা কেটে নষ্ট করে ফেলেছে। একবার চিন্তা করুন সে লোকটির কেমন আফসুস হবে? সে লোকটির
জায়গায় নিজেকে চিন্তা করে দেখুন কত বড় ধরনের ধাক্কা লাগবে, কিন্তু আমি আপনাদেরকে এরচেয়েও বড় আফসুসের সংবাদ দিব সেদিনের সংবাদ যেদিন আল্লাহ তায়ালা আপনাকে আমাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন, এখন আপনি আমি মনে করছি আমি নামাজ পড়ছি, রোজা রাখছি, কুরান পড়ছি, তসবিহ পড়ছি, হজ্ব করেছি, জাকাত দিয়েছি, সব নেক আমলই করেছি, হাশরে যখন শেষ বিচার দিবস আসবে সেখানে আপনি আমলনামা ডান হাতে নিয়ে দৌড়ে দৌড়ে জান্নাতে চলে যাবেন, কিন্তু আপনি জানেন না আপনি যখন আমলনামা নিজ হাতে পাবেন সেখানে যখন দেখবেন আপনার ৫০ /৬০ বছর
জিন্দেগীর কোন আমলই আপনার আমল নামায় উঠে নাই, আপনার আমলনামা
নেকিশূন্য, তখন আপনার কি উপায় হবে? কারন আপনি
আমল করেছেন ঠিকই কিন্তু আপনি এমন কাজ করেছেন যার ফলে আপনার ঈমানই ছিল না ফলে কোন আমলই কবুল হয়নি। তখন আপনার জন্য জাহান্নাম ছাড়া আর কোন পথ খোলা থাকবে না, দুনিয়ার মেয়ের
বিয়ের জন্য অন্যের কাছ থেকে ধার কর্জ করে সে কাজ সমাধানের রাস্তা খোলা থাকলেও হাশরের মাঠে আপনার জন্য জাহান্নামে যাওয়া ছাড়া আর কোন অপশন খোলা থাকবে না।
There is no 3rd option.
তাই সবসময়
মনে রাখবেন আপনার সবগুলি আমলই কাজে আসবে যদি আপনি ঈমানদার হয়ে থাকেন, আর আপনার ঈমান যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আপনার কোন আমলই আর টিকবে না।
আখেরী ওয়াক্তে শয়তানঃ
মনে রাখবেন
শয়তান আমাদের পিছনে সদা লেগে আছে, তাঁর চেষ্টা
প্রচেষ্টা হল আমরা যাতে মুসলমান না থাকি, আপনার আখেরী শ্বাস পর্যন্ত তাঁর এ চেস্টা থাকে
যেন মৃত্যুর সময় ঈমান হারা হয়ে মৃত্যু বরণ করি, হাদীস শরীফে
আছে (ইন্নামাল আমালু
বিল খাওয়াতিম) শেষ মুহুর্তে ঈমানকে হেফাজত করা খুবই জরুরী, কারন আপনার শেষ মুহুর্তে ঈমান হারা হওয়ার ভয় থাকে বেশী।
শয়তান মা বাবার সুরতেঃ
মানুষ যখন
মৃত্যু শয্যায় শায়িত সাখারাত চলে তখন শয়তান সে লোকের মা বাবার সুরতে তার কাছে আসে আর বলে বেটা ইসলাম ধর্ম সঠিক ধর্ম নয়, আমরা মৃত্যুর পর কবরে এসে বুঝতে পেরেছি ইহুদী ধর্ম, খ্রিষ্টান ধর্ম বা হিন্দু ধর্ম সঠিক ধর্ম, এভাবে শয়তান আপনার আমার মৃত্যুর সময় আমাদের আত্মিয় স্বজনের সুরত ধরে আমাদেরকে বোকা বানিয়ে ঈমান হারা করতে তৎপর হয়ে যায়, আর সে
সময় যদি আপনার ঈমান দুর্বল হয় তখন শয়তানের সে ধোকায় পড়ে ঈমান হারা হবার সম্ভাববনা বেশী থাকে।
৪ প্রকার মানুষ চমৎকার হাদীসঃ
হুযুর (দঃ) এর একটি হাদীসের মফহুম হল মানুষ ৪ প্রকারের হয়ে
থাকে
প্রথমতঃ কাফের
ঘরে জন্ম, কাফের ওয়ালা জিন্দেগী, কাফের অবস্থায় মৃত্যু
দ্বিতীয়তঃ মুসলমান
ঘরে জন্ম, মুসলমান ওয়ালা জিন্দেগী, মুসলমান হিসেবে মৃত্যু, আল্লাহ আমাদেরকে মুসলমান হিসেবে মৃত্যু বরণের তৌফিক দান করুন, আমিন।
তৃতীয়তঃ কাফের
ঘরে জন্ম, কাফের ওয়ালা জিন্দেগী, শেষে ঈমানের উপর মৃত্যু।
বর্তমান এমন
একটা সময় চলছে যখন প্রতিদিন সারা বিশ্বে হাজার হাজার বিধর্মীরা ইসলাম ধর্ম কবুল করছে, ইসলামী জিন্দেগীকে আপান করে নিচ্ছে, এবং সারা বিশ্বে বর্তমানে সবচেয়ে বেশী যে ধর্মে মানুষ ধর্মান্তরিত হচ্ছে সেটা হল ইসলাম। আলহামদুলিল্লাহ।
চতুর্থতঃ যেটা
খুবই ভয়ের সংবাদ- তা হল কিছু লোক মুসলমান ঘরে জন্ম হবে, মুসলমান ওয়ালা জীবন যাপন করবে কিন্তু খাতেমা কুফুরীর উপর হবে।
এই চতুর্থ
কেটাগরীর কথা মনে করে আমাদের চিন্তা করা দরকার, আমরা আমাদের দুনিয়ার সকল সম্পদের হেফাজতের জন্য সব ধরনের সিকিউরিটির ব্যবস্থা করি, কিন্তু সবচেয়ে
মূল্যবান যে সম্পদ সে সম্পদের হেফাজতের জন্য আমরা কি কোন সিকিউরিটির ব্যবস্থা করেছি? কখনো কোন আলেম এর কাছে প্রশ্ন করেছি? কখনো কোন বুযুর্গ, আল্লাহ ওয়ালার স্মরণাপন্ন হয়েছি? কিভাবে এই মূল্যবান জিনিষটির রক্ষা করব?
কাওনাইনকে ওয়ালী, দু জাহা কি সরদার আঁকা (দঃ) এর দোয়াঃ
আমরা হলাম
অতি নগন্য ঈমানদার, যে নবী আমাদেরকে ঈমান শিখিয়েছেন, যে নবীর কথায় আমরা ঈমানদার, সে নবী কেমন দোয়া করতেন? (এয়া মুকাল্লিবাল কুলুব ছাব্বিত ক্বালবি আলা দিনিক) হে
অন্তরসমুহকে পরিবর্তন কারী আমাকে দ্বীনের উপর মজবুত রাখুন।
এ দোয়াটি
কে পড়তেন? যার সদকায় আমাদের দ্বীন পেয়েছি সে নবীজিই এ দোয়া পড়তেন, যেমন প্রসিদ্ধ নাতে রাসুলে আমরা শুনি
তেরে সদকে মে আকা, সারে জাহান কো দ্বীন মিলা)
বেদ্বীনুনে কলমা পড়া, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ)
হাছবি রাব্বি জাল্লাল্লাহ মাফি ক্বালবি গাইরুল্লা নুর মুহাম্মদ ছাল্লাল্লা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।
আমাদের হুযুর (দঃ) আমাদেরকে শিক্ষা
দেয়ার জন্যই এ দোয়াটি পড়তেন (এয়া মুকাল্লিবাল কুলুব ছাব্বিত কালবি আলা দ্বীনিক)।
আমাদের এ দোয়া বেশী
বেশী পড়া উচিত, হে আল্লাহ আমাদের অন্তরকে দ্বীনের উপর ছাবেত কদম রাখ
মহানবীর কান্না
তফসিরে রুহুল বয়ানের ১০ খন্ডে ৩১৫ পৃ. বর্ণিত আছে- একদিন হুযুরের দরবারে
ধোকাবাজ শয়তান হাতে পানির বোতল নিয়ে আসল আর বলল আমি লোকদের মৃত্যু যন্ত্রনার সময়
তাদের ঈমানের বিনিময়ে এ বোতল পানি বিক্রী করি, এ কথা শুনে হুযুর উম্মতের কথা
চিন্তা করে অঝোড় ধারা কাঁদতে লাগলেন উনার কান্না দেখে হুযুরের আহলে বায়তও কাঁদতে
লাগলেন, এমন সময় আল্লাহ তায়ালা ওহী পাঠালেন হে মাহবুব আপনি চিন্তা করবেন না, আমার
বান্দাদের মৃত্যুর সময় শয়তানের ধোকা থেকে আমি রক্ষা করে থাকি।
আযব ঘটনা
১টি ছাগলের বাচ্চা হযরত ওমরকে কবরে বেশী পেরেশান করছে
ঈমানের নুর কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়
ওলামায়ে কেরাম এর মাঝে এ বিষয়ে মতপাথক্য আছে যে
ঈমান বৃদ্ধি পায় নাকি ঈমানের নুর বৃদ্ধি পায়, তবে ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর মতে
ঈমানের নুর বৃদ্ধি হয়,
এক কথায় নেক আমল দ্বারা ঈমানের নুর বৃদ্ধি পায় আর
গুনাহের দ্বারা ঈমানের নুর কমে যায়
হাদীসঃ হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেছেন ঈমানের
৭০টির বেশী ব্রাঞ্চ, বা শাখা তাঁর মধ্যে সবচেয়ে উঁচু স্তরের শাখা হল লাইলাহা
ইল্লাল্লাহ আর সবচেয়ে নিচুঁ দরজার শাখা হল রাস্তা থেকে কষ্ট দায়ক জিনিষ দুর করে
দেয়া।
দেখুন কলমা পড়া যেমন মজবুত ঈমানের দলিল তেমনি মানব সেবাও ঈমানদার হওয়ার দলিল।
যদি আপনি কুরান হাদীস গবেষনা করেন তাহলে দেখতে পাবেন ঈমানের যে সব শাখার কথা আছে
তার মধ্যে বেশীর ভাগ দেখবেন মানুষের হক সংক্রান্ত, মানুষের কল্যাণ সংক্রান্ত, মানব
সেবা সংক্রান্ত।
ঈমানের ৭৭টি শাখা
আলেম-উলামাগণ হাদীসের ইঙ্গিতের মাধ্যমে গবেষণা করে কুরআন হাদীস থেকে ঈমানের ৭৭টি শাখা নির্ণয় করেছেন এবং এগুলোকে এভাবে ভাগ করেছেন:
ক). দিলের দ্বারা সম্পন্ন
হয় ৩০টি।
খ). জবানের দ্বারা সম্পন্ন
হয় ৭টি।
গ). বাহ্যিক
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা সম্পন্ন হয় ৪০টি।
আমলের সুবিধার জন্য সবগুলো
সংক্ষেপে নিম্নে দেওয়া হল:
ক). দিলের দ্বারা যেগুলো
সম্পন্ন হয়ঃ –৩০টি।
১- আল্লাহর উপর ঈমান আনা।
২-আল্লাহ চিরন্তন ও চিরস্থায়ী, তিনি ব্যতীত
সবকিছু তাঁর মাখলুক-একথা বিশ্বাস করা। ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান আনা।
৩-
আসমানী কিতাবসমূহের প্রতি ঈমান আনা।
৪-আল্লাহর প্রেরিত পয়গম্বরগণের প্রতি
ঈমান আনা।
৫-তাকদীরের উপর ঈমান আনা।
৬-কেয়ামতের উপর ঈমান আনা।
৭-বেহেশতের উপর ঈমান আনা।
৮-দোযখের উপর ঈমান আনা।
৯-আল্লাহর সাথে মহব্বত রাখা।
১০-কারও সাথে আল্লাহর জন্যই মহব্বত রাখা
এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কারও সাথে দুশমনী রাখা।
১১-রাসূল ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম )-এর সাথে মহব্বত রাখা।
১২-এখলাস ( অর্থাৎ, সবকিছু আল্লাহর
উদ্দেশ্যেই করা।
১৩-তওবা অর্থাৎ, কৃত পাপের জন্য
অনুতপ্ত হয়ে তা পরিত্যাগ করা এবং ভবিষ্যতে তা না করার জন্য সংকল্প করা।
১৪-আল্লাহকে ভয় করা।
১৫-আল্লাহর রহমতের আশা রাখা।
১৬-আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হওয়া।
১৭-হায়া বা লজ্জা করা।
১৮-শোকর করা।
১৯-অঙ্গীকার রক্ষা করা।
২০-সবর করা।
২১-বিনয়, নম্রতা ও বড়দের প্রতি সম্মানবোধ।
২২-স্নেহ-মমতা ও জীবের প্রতি দয়া।
২৩-তাকদীরের উপর রাজী থাকা।
২৪-তাওয়াক্কুল করা।
২৫-নিজেকে বড় ও ভাল মনে না করা।
২৬-হিংসা বিদ্বেষ না রাখা।
২৭-রাগ না করা।
২৮-কারও অমঙ্গল চিন্তা না করা,
২৯-কারও প্রতি কুধারণা না করা।
৩০- দুনিয়ার মহব্বত ত্যাগ করা।
খ). জবানের দ্বারা যেগুলো
সম্পন্ন হয়ঃ–৭টি।
৩১-কালেমা তাইয়্যেবা পড়া।
৩২-কুরআনে কারীম তেলাওয়াত করা।
৩৩-ইলমে দ্বীন শিক্ষা করা।
৩৪- ইলমে দ্বীন শিক্ষা দেয়া।
৩৫. দুআ বা আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করা।
৩৬-আল্লাহর যিকির।
৩৭- বেহুদা কথা থেকে জবানকে হেফাযত করা।
গ). বাহ্যিক
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা যেগুলো সম্পন্ন হয়ঃ–৪০টি।
৩৮ -পবিত্রতা হাসিল করা।
৩৯ –
নামাযের পাবন্দি করা।
৪০ -সদকা, যাকাত, ফিতরা, দান-খয়রাত, মেহমানদারী ইত্যাদি।
৪১ –
রোযা।
৪২ –
হজ্ব।
৪৩ –
এতেকাফ ( শবে ক্বদর তালাশ করা এর অন্তর্ভুক্ত )
৪৪ –
হিজরত করা অর্থাৎ, দ্বীন ও ঈমান রক্ষার্থে দেশ-বাড়ি ত্যাগ করা।
৪৫ –
মান্নত পুরা করা।
৪৬ –
কসম করলে তা পুরা করা আর কসম ভঙ্গ করলে তার কাফফারা দেয়া।
৪৭ –
কোন কাফফারা থাকলে তা আদায় করা।
৪৮ -ছতর ঢেকে রাখা।
৪৯-কুরবানী করা।
৫০ -জানাযা ও যাবতীয় আনুষাঙ্গিক কাজের
ব্যবস্থা করা।
৫১ –
ঋণ পরিশোধ করা।
৫২ -লেন-দেন ও কাজ-কারবার সততার সাথে এবং
জায়েয তরীকা মোতাবেক করা।
৫৩ -সত্য সাক্ষ্য দান করা। সত্য জানলে তা
গোপন না করা।
৫৪ –
বিবাহের দ্বারা হারাম কাজ থেকে বিরত থাকা।
৫৫ -পরিবার-পরিজনের হক আদায় এবং চাকরদের
সাথে সদ্ব্যবহার করা।
৫৬ –
মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করা।
৫৭ -ছেলে-মেয়েদের লালন পালন ও সুশিক্ষার
ব্যবস্থা করা।
৫৮ –
আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদ্ব্যবহার করা।
৫৯ –
উপর ওয়ালার অনুগত হওয়া, যেমন চাকরের প্রভুভক্ত হওয়া।
৬০ –
ন্যায় ও নিরপেক্ষভাবে বিচার করা।
৬১ -মুসলমানদের জামাতের সাথে থাকা ও
হক্কানী জামাতের সহযোগিতা করা,তাদের পথ ছেড়ে অন্যপথে না চলা।
৬২ -শরীয়ত বিরোধী না হলে শাসনকর্তাদের
অনুসরণ করা।
৬৩ -লোকদের মধ্যে কোন ঝগড়া বিবাদ হলে তা
মিটিয়ে দেয়া।
৬৪ –
সৎ কাজে সাহায্য করা।
৬৫-সৎ কাজের আদেশ করা ও অসৎ কাজে বাঁধা
প্রদান করা।
৬৬-জেহাদ করা, সীমান্ত রক্ষা করাও
এর অন্তর্ভুক্ত।
৬৭-শরীয়ত নির্ধারিত শাস্তি কায়েম করা।
৬৮-আমানত আদায় করা, গনীমতের
এক-পঞ্চমাংশ আদায় করা এর অন্তর্ভুক্ত।
৬৯- অভাবগ্রস্তকে কর্জ দেয়া।
৭৭-
প্রতিবেশীর হক আদায় করা ও তাদেরকে সম্মান করা।
৭১-লোকদের সাথে সদ্ব্যবহার করা।
৭২-সালামের জবাব দেয়া ও সালাম প্রদান
করা।
৭৩-যে হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলে
তাকে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা।
৭৪-পরের ক্ষতি না করা, কাউকে কোনরূপ কষ্ট
না দেয়া।
৭৫-অর্থের সদ্ব্যবহার করা।
৭৬-খেল-তামাশা, ক্রীড়া-কৌতুক ও
নাচ-গান থেকে বিরত থাকা।
৭৭-রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু দূর করা।
হযরত ওমরকে স্বপ্ন দেখাঃ
হযরত ওমর (রাঃ) যিনি ২য় খলিফা ছিলেন,
জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ছিলেন, যাকে দেখলে শয়তান
রাস্তা পরিবর্তন করে ফেলত, যার ব্যপারে নবীজি বলেন আমার পর যদি
কেহ নবী হয় তাহলে হযরত ওমর নবী হত, সে ওমর (রাঃ) যখন ইন্তেকাল করলেন তখন তাঁর ছেলে আবদুল্লাহ হযরত
ওমরকে স্বপ্ন দেখল, ছেলে বাবাকে প্রশ্ন করল বাবা আপনার সাথে আপনার
প্রভু কেমন আচরন করেছেন? হযরত ওমর বলেন আমাকে উত্তম প্রতিদান
দিয়েছেন তবে একটি বিষয়ে আমি জবাব দিতে পারছি না তা হল আমার খেলাফত কালে এক রাস্তায়
ছোট গর্ত সৃষ্টি হয় আর সে গর্তে পড়ে এক ছাগলের বাচ্চা পায়ে সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়,
কেন ছাগলের বাচ্চাটি পায়ে আঘাত পেল সে প্রশ্নটি আমাকে খুব পেরেশান করে
রেখেছে,
এখানে আপনি মনে করবেন না হযরত ওমর অপরাধী, হযরত ওমরের
দ্বারা আল্লাহ তায়ালা এ জন্য এ স্বপ্ন প্রকাশ করেছেন যেন মানুষ নিজ নিজ দায়িত্ব জিম্মাদারী
বুঝে,
হে আমার ভায়েরা আপনারা প্রত্যেকেই কোন না কোন বিষয়ে জিম্মাদার আজ চিন্তা করুন আপনার
জিম্মাদারী কি আপনি সঠিক ভাবে পালন করছেন? যদি না করতে
পারে তাহলে কাল আল্লাহর পাকড়াও থেকে আপনি কোন ভাবেই রেহায় পাবেন না।
ঈমান এর আরো একটি আলামত হল আপনি যদি মুমিন হয়ে থাকেন তাহলে আপনার দ্বারা অন্য
কোন মুসলমান কষ্ট পাবে না যেমন অপর হাদীসে আছে-
হাদীসঃ তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম মুসলমান সে যার হাত ও জবান থেকে অপর
মুসলমান নিরাপদে থাকে।
বুঝা গেল আপনার হাত দ্বারা যদি কাউকে কষ্ট দেন মুখে কাউকে গালি দেন, গীবত
করেন, মিথ্যা অপবাদ দেন তাহলে আপনি পূর্ণ
মুমিন হতে পারেন নি।
হাদীসঃ অপর এক হাদীসে আছে হায়া শরম ও ঈমানের একটি ব্রাঞ্চ।
আপনি কলমা পড়েছেন সাথে আপনি কাউকে গালি দেন না, কারো গায়ে হাত তুলেন না,
রাস্তায় ময়লা ফেলেন না, গীবত করেন না,
তাহলে আমরা বুঝব আপনি ঈমানদার,
#আপনি যদি মুমিন হন তাহলে স্ত্রীকে অন্যায় ভাবে মারধর করতে পারবেন না
#মানুষ চলাচলের পথে আপনি কষ্ট দায়ক বস্তু ফেলতে পারবে না।
#প্রতিবেশীর কষ্ট হয় এমন কাজ করতে পারবেন না।
#বেহায়াপনায় লিপ্ত হতে পারবেন না।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ঈমানের প্রতিটি শাখার প্রতি যন্তবান হওয়ার তৌফিক দান
করুন
ঈমান কিভাবে ১ সেকেন্ডে চলে যায়?
অনেকে মনে
করবেন আমি প্রতিদিন কুরান পড়ি, নামাজ পড়ি, কলমা পড়ি তাহলে আমি কেন বেঈমান হব? এটা হল
মুলত শয়তানের কানপড়া, কারন্ আলা হযরত বলেন যে ব্যক্তি নিজের ঈমান ছিনতাই হওয়ার কোন ভয় করে না তার ঈমান মৃত্যুর সময় শয়তান ছিনিয়ে নেয়ার ভয় বেশী। আমরা ঈমানদার হই কলমা পড়ে, ঈমানদার হওয়ার
জন্য টাকা খরচ করতে হয় না, বিল্ডিং বানাতে
হয় না, বরং কলমা
পড়ার সাথে সাথেই (আশহাদু আন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু) আপনি ঈমানদার হয়ে গেলেন, তেমনি এমন কিছু কথা আছে যা বলার সাথে সাথেই আপনি মুহুর্তের মধ্যেই বেঈমান হয়ে যাবেন। আমাদের এ জিহ্বাটা যদি
ভাল চলে তাহলে তা আপনাকে জান্নাতের উচ্চ মকামে পৌঁছাতে পারে, আর এ জিহ্বা যদি
খারাপ চলে তাহলে তা আপনাকে জাহান্নামের গভীরে পৌছে দিতে সক্ষম।
জিহ্বা কিভাবে ঈমান ধ্বংস করে?
যারা নৌজোয়ান
তারা বিভিন্ন সময় বন্ধুদের সাথে আড্ডায় নানা ধরনের হাসি ঠাট্টা করে, ইসলাম ধর্মের
বুনিয়াদি বিষয় যেমন জান্নাত জাহান্নাম, ফেরেশতা, কবর, হাশর,
আমল নামা, এসব বিষয়ে শয়তানের দোষরেরা হাজারো চুটকি, কমেডি, বানিয়ে তা ছেড়ে দিয়েছে, আর সে সব বিষয় নিয়ে আমাদের মুসলমান ভায়েরাও হাসি ঠাট্টায় মেতে উঠে, এটাই ঈমানের
বারোটা বাজাতে যথেষ্ট।
তেমনি যে
সব গান যুবক ভাইদের মুখে মুখে শুনা যায়, গাড়ীতে উঠলে এফএম রেডিওতে শুনা যায় অধিকাংশ গানের কলিতে আছে কুফুরী কালাম যা গাইতে গাইতে আমাদের ঈমানের বারোটা বাজে।
এসব
গানে গাইরুল্লাকে পুঁজা
করার কথা আছে
গাইরুল্লাকে
সিজদা করার কথা
আছে
আল্লাহকে
জালেম বলা হয়,
নাউজুবিল্লাহ।
আর
এসব গান আমাদের
যুবক ভাইদের কাছে
এতই প্রিয় হয়
তারা সব সময়
হাটতে বসতে চলতে
ফিরতে গুন গুন
করে এ গান
গুলি গাইতে থাকে
আর ঈমানের বারোটা
বাজাতে থাকে।বিশেষ
করে হিন্দী গানে
কুফুরী কালাম সবচেয়ে
বেশী যা বুঝে
না বুঝে আমাদের
ভায়েরা গাইতে থাকে।
আর নিজের ঈমান
ও আমলকে বরবাদ
করতে থাকে।
সাবধান
হে আমার মুসলমান
ভায়েরা, যারা না
জেনে না বুঝে
হিন্দী গান চর্চা
করেন একবার এর
অর্থের দিকে খেয়াল
করবেন তা যেন
আপনার সবচেয়ে মূল্যবান
সম্পদ ঈমানের জন্য
খতরা না হয়
কুফুরী কালামঃ
আমরা জেনে না জেনে অনেক সময় এমন কিছু কথা বলে ফেলি যা কুফুরী কালাম, যেমন
১। আল্লাহ সবসময় আমার দুষমনকে সাহায্য করেন
২। আল্লাহ আমার কোন দোয়াই কবুল করেন না, এখন আর আল্লাহর কাছে কিছু চাই না
৩।আল্লাহ আমার একমাত্র সন্তানকে কেড়ে নিয়ে আমার উপর বড় যুলুম করেছে
নাউজুবিল্লাহ
৪।অভাবের কারনে বলে হে আল্লাহ অমুকও তোমার বান্দা তাকে কত নেয়ামত দিয়ে রেখেছ
আমিও তোমার বান্দা আমাকে কিছুই দিলে না এটাকি ন্যায় বিচার হল?
৫।হে আল্লাহ আমি কি অপরাধ করেছি যে
তুমি আমাকে এত শাস্তি দিচছ
৬। সন্তানের মৃত্যুতে বৃদ্ধ মা বাবা বলে হে আল্লাহ তুমি আমাদেরকে না নিয়ে আমার
সন্তানকে কেন কেড়ে নিলে এতবড় অন্যায় তুমি কেন করলে? নাউজুবিল্লা
ঈমানের সাথে মৃত্যুর ৪টি ওয়াজিফাঃ
আলা হযরতের
কাছে এক ব্যক্তি এসে আরজ করল হুযুর আমার জন্য দোয়া করবেন যেন ঈমানের সাথে মৃত্যু বরণ করতে পারি তখন আলা হযরত তাঁর জন্য দোয়া করলেন এবং তাঁকে ৪টি আমল শিখিয়ে দিলেন যাতে ঈমানের সাথে মৃত্যু বরণ করতে পারে আমলগুলি হল
১)
প্রতিদিন সকালে ৪১ বার (এয়া হাইয়্যু
এয়া কাইয়্যূম লা ইলাহা ইল্লা আনতা)
আগে
পরে ১ বার দরুদ
শরীফ পাঠ করবে
২)
প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে সব দোয়া দরুদ পড়ার পর সর্বশেষে ১ বার সুরা
কাফেরুন পাঠ করবে এর পর আর কথাবার্তা বলবে না।
৩)সকাল সন্ধ্যায় ৩ বার এ
দোয়া পাঠ করবেন (আল্লাহুম্মা ইন্না নাউজুবিকা মিন আন নুশরিকা বিকা শাইয়্যান নালামুহু ওয়া নাসতাগফিরুকা লিমা লা নালামুহু)
৪)সকাল সন্ধ্যায় ৩ বার পাঠ
করবে (বিসমিল্লাহি আলা দ্বিনি, বিসমিল্লাহি আলা নাফসি, ওয়াউলদি ওয়া আহলি ওয়া মালি)
ইনশা আল্লাহ
এ ওয়াজিফা সমুহ
নিয়মিত পড়লে ঈমানের সাথে মৃত্যু হবে।
ঈমান নবায়ন করার নিয়ম
যারা এভাবে না জেনে কুফুরী কালাম বলে ফেলেছেন তাঁরা ঈমানকে নবায়ন করতে হবে।
প্রথমে যে কুফুরী কথাটি বলেছেন সেটি উল্লেখ পূর্বক বলবে হে আল্লাহ আমি অমুক কথাটি
বলে ফেলেছি আমি তওবা করছি িএরপর কলমা পড়বেন (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর
রাসুলুল্লাহ)
আর কেহ সাবধানতা বশতও ঈমান নবায়ন করতে পারেন বলবেন হে আল্লাহ আমার মুখ থেকে
যদি কোন কুফুরী কথা বের হয় তার জন্য আমি তওবা করছি এটা বলে কলমা পাঠ করবেন। এভাবে
সাবধানতামুলক তওবা সবসময় করা যায়
বিবাহ নবায়ন করার পদ্ধতি
যারা কুফুরী কথা বলেছেন তারা ঈমান নবায়ন করার পর বিবাহও নবায়ন করে নিবেন তার
জন্য লোকজন ডাকার দরকার নাই, স্বামী নিজে আউজু, বিসমিল্লাহ পড়ে সুরা ফাতেহা পড়বে
দুইজন স্বাক্ষী উপস্থিত করবে এবং স্ত্রীকে বলবে আমি তোমাকে দুই তোলা সাড়ে সাত মাশা
রৌপ্যে মহর এর বিনিময়ে (যার বর্তমান পরিমান হয় ৩০ গ্রাম, ৬১৮ মিলিগ্রাম আর টাকার
পরিমানে হয় মাত্র ৭৮৬ টাকা ) বিবাহ করলাম, স্ত্রী বলবে আমি কবুল করলাম। তাহলে
বিবাহ নবায়ন হয়ে গেল। বিবাহ নবায়নের যে নতুন মহর তা চাইলে স্বামী স্ত্রীকে দিয়ে
দিতে পারে কিংবা স্ত্রী চাইলে তা ক্ষমাও করে দিতে পারে
ঈমান আমলের জন্য আরেকটি ধ্বংসযজ্ঞ রিয়াঃ
এক
লোক সারাদিন মজদুরি
করে ১০০০ টাকা
বেতন পায়, সে
প্রতিদিন তার মজদুরির
টাকা বা বেতন
নিয়ে ঘরে আসে,
কিংবা এক লোক
সরকারী চাকরী করে
সে যখন মাস
শেষে বেতন পায়
সে বেতনের টাকা
ঘরে এনে আগুন
দিয়ে সে বেতনের
টাকা জ্বালিয়ে দেয়,
এ লোকটিকে আপনি
কি বলবেন? অবশ্যই
তাঁকে বলবেন সে
বেওকুফ, বোকা, পৃথিবীর
সেরা বোকা। তেমনি
যে লোক সারাদিন
নেক কাজ করে
আর সে নেক
কাজ করে শুধু
মানুষের বাহবা পাওয়ার
নিয়তে, সমাজে সুনামের
জন্য, মসজিদে দান
করে দানবীর হওয়ার
জন্য, যে লোক
শুধু লোক দেখানোর
জন্য মানুষের বাহবা
হাছিলের জন্য নেক
কাজ করে তার
এসব নেক আমল
কাল হাশরের মাঠে
কোন কাজে আসবে
না,
সবগুলি নেক আমলই
হবে নেকী শূণ্য।
কারন সে ঐ
দিনমজুরের মতই কাজ
করেছে যে সারাদিন
যা কামাই করল
তা সন্ধ্যায় জ্বালিয়ে
ছাই করে ফেলল।
হে
ইসলামী ভায়েরা আল্লাহর
ওয়াস্তে নেক কাজ
করুন, আল্লাহকে খুশী
করার নিয়তে নেক
কাজ করুন, নতুবা
আখেরাতে আপনার নেক
কাজের কোন মূল্যই
আপনি পাবেন না।
আর তখন আফসুস
শত আফসুসই আপনার
সঙ্গী হবে। রিয়াকে
শিরিকে আসগর, ছোট
শিরীক বলা হয়েছে।
তাই এ ভুল
করবেন না। নিজের
আমল বরবাদ করবেন
না।
গোপন
নেকী প্রচার করার
শয়তানী কারগুজারীঃ
হজ্বের প্রচারঃ
আমরা
অনেক নেক আমল
আছে যা কেউ
জানেনা, কাউকে জানানোর
প্রয়োজনও নাই, কিছু
নেক আমল অবশ্যই
মানুষকে জানানো জরুরী,
কিন্তু কিছু নেক
আমল মানুষকে জানানোর
কোন প্রয়োজনই নাই,
যেমন এক ভাই
হজ্ব করেছেন তাকে
এক ভাই প্রশ্ন
করল ভাই আপনার
নাম কি? সে
উত্তর দিল হাজী
রহিম, এবার হাজী
রহিম প্রশ্ন কারীকে
জিজ্ঞেস করল ভাই
আপনার নাম কি?
এবার সে উত্তর
দিল আমার নাম
নামাজি করিম, এখন
হাজী রহিম বলল
এটা কেমন নাম?
করিম সাহেব উত্তর
দিল ভাই আপনি
১ বার হজ্ব
করে যদি হাজী
বলতে পারে আমি
দিনে ৫ ওয়াক্ত
নামাজ পড়ে নামাজি
বলতে পারব না?
লক্ষ টাকা খরচ
করে নিজের নামের
আগে হাজী লাগিয়ে
রিয়া করা থেকে
বাঁচুন।
তাহাজ্জুদের প্রচারঃ
অনেক
লোক আছে রাতে
তাহাজ্জুদ পড়ে, এখন
তাহাজ্জুদ পড়ে সে
কথাও মানুষকে জানাতে
হবে এখন কিভাবে
জানাবে সে জন্য
খুবই টেনশনে পড়ে
যায়,
অফিসে গিয়ে টেবিলে
মাথা রেখে ঘুমায়,
পাশের কলিগ প্রশ্ন
করল ভাই কি
হয়েছে, তখন নিজের
রাতের এবাদতের প্রকাশের
সুযোগ পেয়ে যায়,
আরে ভাই বলিয়েন
না,
তাহাজ্জুদের সময় উঠেছিলাম তাই ঝিমুচ্ছে।
আজ
আমি আমার মুসল্লীদের
অনুরোধ করব, আজ
গিয়ে হিসাব করবেন
এমন কয়টি নেকী
আপনার কাছে জমা
আছে যা শুধু
মাত্র আপনি জানেন
আর আপনার রব
জানেন? সারা জীবনের
আমলনামা খুঁজে একটাও
হয়ত পাওয়া যাবে
না।
ডায়লগঃ
একটা
ডায়লগ আছে সরকারী
মাল দরিয়ামে ডাল
এখন
ডায়লগ হল নেকি কর
ফেইসবুকমে ডাল
ওয়ামতাজুল এয়াউমা আইয়্যুহাল মুজরিমুন
আল্লাহ তায়ালা
কাল কেয়ামতের মাঠে হযরত আদম (আঃ)
কে বলবেন হে আদম মুজরিমদের কাতার বন্দি কর, সেদিন সকল
অপরাধী মুজরিম, রিয়াকারী, মুজরিমের কাতারে দাঁড়াবে, আপনিও হয়ত সে মুজরিমের কাতারে, আমিও হয়ত হব সে মুজরিমের কাতারে, তখন আপনারা আমাকে প্রশ্ন করবেন হুযুর আপনার ওয়াজ শুনে আমরা আমল করেছি আজ নাজাত পেয়েছি, কিন্তু আপনি কেন আজ মুজরিমের কাতারে? সন্তান পিতাকে দেখতে পাবে মুজরিমের কাতারে, ছাত্র শিক্ষককে দেখবে মুজরিমের কাতারে, সেদিন কোন কিছু গোপন থাকবে না, আযাবতো আছেই, আযাবের আগেই আযাব হল দুনিয়ায় যাদের দৃষ্টিতে আনি সম্মানি আজ তাদের সামনেই অবরাধীদের কাতারে, বেনামাজীর কাতারে, ঘুষখোরের কাতারে, জেনাকারীর কাতারে,
আজ হয়ত
গোপনে গুনাহ করেই নিচ্ছেন কিন্তু কাল সে গোপনীয়তা বাকী থাকবে না। তাই সাবধান আজই তওবা করুন, সেদিন আসার আগে যেদিন কোন উপায় থাকবে না।
ঈমানের দুর্বলতার আলামত কি?
আমরা আমর
বিল মারুফ সহজে করি, কিন্তু নেহি
আনিল মুনকার তথা মানুষকে অন্যায় কাজে বাঁধা প্রদান করি না। আর যখন আমরা মানুষকে নেহি আনিল মুনকার তথা অন্যায় কাজে বাঁধা প্রদান করব না তখন বুঝে নিন আপনার আমার ঈমান দুর্বল হয়ে গেছে।
হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন যখন কোন অন্যায় দেখবে তখন মুমিনের জন্য শক্তিশালী ঈমানদারীর পরিচয় হল সে যেন তা শক্ত হাতে বাঁধা প্রদান করে,
আর যদি
শক্ত হাতে প্রতিরোধ করার সে ক্ষমতা না থাকে তাহলে ২য় পর্যায়ের পদক্ষেপ হল মুখে নিষেধ করা, এটা হল
১ম স্তর থেকে কম ঈমানের পরিচয়।
আর যদি
মুখেও নিষেধ করার সে শক্তি বা ক্ষমতা না থাকে তাহলে ৩য় স্তর হল মনে মনে সে অন্যায়কে ঘৃণা করা, আর কেহ
কোন অন্যায় দেখে শক্ত হাতে বাঁধা দিতে পারল না, মুখেও প্রতিবাদ
করার সাহস পেল না, বরং ৩য়
স্তরের কাজ মনে মনে ঘৃণা করল এটা ঈমান দুর্বল হওয়ার আলামত।
হে মুসলমান
ভায়েরা আজ আপনি কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন না, শুধু মনে
মনে ঘৃণা করেন, এটা আমার নবী যে বলেছেন দুর্বল ঈমানের আলামত, নবীজি আপনার আমার ঈমানের ফযিলত বয়ান করেন নি বরং আমার নবী সে কথাটাই বলে গেছেন, আজ আমরা অন্যায় দেখে শুধু মনে মনে ঘৃণা করি, শক্ত হাতে
কিংবা মুখে প্রতিবাদ করিনা সেটা আমাদের ঈমান যে দুর্বল হয়ে গেছে সেটারই আলামত।
আর যারা
অন্যায়কে অন্যায় মনে করে না মাআজাল্লাহ তাঁর ঈমানের বারোটা বেজে গেছে।
আজ আমরা
অন্যায়ে বাঁধা প্রদান করি না, তাইতো দিন
দিন আমাদের সমাজে অন্যায় অত্যাচার বাড়তেই চলেছে। আপনার পাশের ঘরের ছেলেটি এয়াবা ব্যবসায় জড়িত, আপনি চিন্তা করছেন আমার ছেলেতো ভাল আছে আমি কেন তার বিরুধীতা করতে যাব? এ ধরনের
চিন্তাই আজ সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, আমাদের যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, এই সমাজ আমার, এই রাষ্ট্র আমার, আমরা সকল মুসলমান ভাই ভাই, এলাকার একজনও বিপথে
চলে গেলে সে জন্য সকলকেই একসাথে তাঁরে ফিরিয়ে আনতে ঝাপিয়ে পড়তে হবে তবেই মুক্তি, না হয় যে অপরাধ আজ শুরু হয়েছে তা কাল আর আপনার আমার কন্ট্রোলে থাকবে না।
অন্যায় দেখে যদি বাঁধা না দেয় তখন কি কি আযাব হবে?
যখন মানুষ
অন্যায় দেখলে বাঁধা প্রদান করবেন না তখন কি হবে সে ব্যপারে হুযুর (দঃ) এরশাদ করেন- যার মফহুম কিছুটা এমন-
#যখন আমার উম্মত অন্যায় কাজে বাঁধা প্রদান করবে না তখন তাদের উপর নুযুলে কুরআনের বরকত উঠিয়ে নেয়া হবে,
# যখন তারা অন্যায় দেখে বাঁধিা দিবে না তখন তাদের উপর জালেম লোকদের কর্তৃত্ব প্রদান করা হবে,
# যখন তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবে না তখন তাদের কোন দোয়া কবুল করা হবে না।
আজ অন্যায়ের
বিরুদ্ধে কথা বলবে এমন খাঁটি বান্দা খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল। আজ আমরা অন্যায়কে অন্যায়ই মনে করি না। তা আমাদের জন্য খুবই আফসুসের বিষয়।
আজ বেপর্দীগী
দেখে আমাদের ঈমানী জজবা জাগ্রত হয়ে উঠে না
আজ নেশার
বাজার গরম দেখে আমাদের বিবেক নাড়া দেয় না
আজ জেনার
বাজার গরম দেখে আমাদের কন্ঠে প্রতিবাদ
আসে
না
তাইতো আজ
আমাদের উপর মসিবতের উপর মসিবত, আমাদের পরিবারে অশান্তি, শত দোয়া করি তবুও কবুল হয় না, কারন আমরা
আজ অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে ভুলে গেছি।
আল্লাহ আমাদেরকে
ঈমানকে হেফাজত করার, অন্যায়ের প্রতিবাদ করার তৌফিক দান করুন আমিন।
কোন মন্তব্য নেই