নেককার মা যখন যেনা করতে মজবুর হয়ে গেল। এক মা এর করুন কাহিনি- শিক্ষনীয় গল...





ক্ষুধার্থ শিশুর নেককার মা যখন যেনা করতে মজবুর হয়ে
অতি সংক্ষেপে ঘটনাটা আরজ করব, ইমাম
ইয়াফির ফরমান- দুইজন বন্ধু ছিল তাদের মধ্যে খুবই মহব্বত ছিল, আন্তরিকতা ছিল, এমন
গভীর মহব্বত যে একজন থেকে অন্যজনের কোন বিষয় গোপন ছিল না, একজনের এমন মর্তবা ছিল
সে যখন নিজের হাত আগুনের ভিতর ঢেলে দিত, সে আগুন তার হাতে আছর করত না, তখন অপর
বন্ধু তাঁকে প্রশ্ন করল ভাই আমাকে বল তুমি এমন মর্তবা কিভাবে অর্জন করেছ? তখন সে
বলল আমার এ শক্তি আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন এর পিছনে এক বড়ই চমৎকার কাহিনি লুকায়িত
আছে। তুমিতো জান আমি অনেক ধন সম্পদের মালিক, আমি পৈত্রিক ভাবেই ধনী, আমার বাবার
অনেক সম্পদ ছিল, আমার চেহেরা সুরতও অনেক সুন্দর, আমি যখন যুবক হলাম, তখন একদিন
গরমের সিজনে আমার ঘরের জানালা দিয়ে পাশের ঘরের এক মেয়ের চেহেরা দেখলাম, সে মেয়েটির
চেহেরা দেখেই আমি তাঁকে পাওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেলাম, সে মেয়েটির সাথে আমার মহব্বত
হয়ে গেল,  আমি সে মেয়েটিকে প্রস্তাব
পাঠালাম বললাম আমি তোমার সকল আশা পুরন করব তুমি শুধু আমার আশা পুরন করে দাও,
কিন্তু সে মেয়েটি ছিল খুবই ধার্মিক, খোদাভিরু, মেয়েটির ঘরের পরিবেশ ছিল অত্যন্ত
পবিত্র, তাই সে আমার কোন কথাই শুনল না, এভাবে আমি তাকে নানা ভাবে প্রস্তাব পাঠাতে
লাগলাম কিন্তু সে আমার সকল প্রস্তাবই ফিরিয়ে দিল। এভাবে দিন মাস বছর যেতে লাগল।
একদিন সে মেয়েটির বিয়ে হয়ে গেল এক গরীব ঘরে। বিয়ের পর সে মেয়েটি কয়েক বছরে ৩
সন্তানের মাও হয়ে গেল। এক সময় আমাদের শহরে দুর্ভিক্ষ দেখা দিল।
এ সময় আমার বাবা এলাকার লোকদেরকে
খাদ্যসামগ্রী বিলি করার ঘোষনা দিল, যথাসময়ে এলাকার গরীব লোকজন আমাদের আঙ্গিনায় এসে
লাইন ধরল, আমি আমার বাবার সাথে গরীবদের খাদ্যসামগ্রী দিচ্ছিলাম, আমি দেখলাম সে
কাতারে সে মেয়েটিও দাঁড়ানো যার জন্য আমি পাগল ছিলাম।
তখন আমি সে মেয়েটির কাছে গিয়ে প্রশ্ন
করলাম সে কেন েএই গরীবের কাতারে? মেয়েটি বলল আমার স্বামী গত কিছুদিন আগে মৃত্যু
বরণ করেছে, আমার ঘরে ৩ এতিম সন্তান আছে এই দুর্ভিক্ষের সময় ঘরে কোন খাদ্যপানি নাই,
বাচ্চাগুলি ক্ষুধার জ্বালায় বিলাপ করছে, তাদের এ অবস্থা দেখে আমি সকল লাজ শরম বাদ
দিয়ে আপনাদের দরজায় গরীবদের কাতারে কিছু খাদ্যের আশায় দাঁড়িয়ে গেলাম, একজন মা
নিজের ক্ষুধা বরদাশত করে নেয়, কিন্তু সন্তানের ক্ষুধা বরদাশত করতে পারে না।
যুবকটি বলেন যখন আমি দেখলাম আমার এই
মাশুকা এখন মজবুর অসহায়, আর তার সে মজবুরিকে কাজি লাগিয়ে আমার কু মতলব চরিতার্থ
করার জন্য তাকে একপাশে ডেকে নিয়ে কু প্রস্তাব দিলাম, আর বললাম তুমি আমার খহেশ পুরন
করে দাও আমি তোমার ঘরে এত খাদ্য দ্রব্য পাঠাব এত টাকা পয়সা পাঠাব তোমার সব অভাব
দুর হয়ে যাবে, মুলত যুবক অসহায় সে বিধবা মাকে যিনার প্রস্তাব দিয়ে দিল,
নাউজুবিল্লাহ।
হে আমার মা ও বোনেরা একবার চিন্তা
করুন এক দিকে সে মায়ের ৩ ক্ষুধার্থ সন্তান অন্য দিকে যিনার প্রস্তাব, মনে রাখবেন
একজন মাকে আল্লাহ সন্তানের প্রতি যে মহব্বত দিয়েছেন এমন মহব্বত পৃথিবীর আর কাউকে
দান করেন নি, আর সে ক্ষুধার্থ সন্তানের মাকে যুবকটি কু প্রস্তাব দিল আর বলল যদি আজ
আমার প্রস্তাবে রাজি না হও তাহলে সবাইকে সব কিছু দিব কিন্তু তোমাকে কিছুই দেয়া হবে
না। তখন মা টি বলে উঠল হে নওজোয়ান আল্লাহকে ভয় কর, আল্লাহ তোমাকে শক্তি দিয়েছে
সম্পদ দিয়েছে তা র শোকর আদায় কর, জেনা করিও না।  তোমার এ সাময়িক আনন্দ চলে যাবে কিন্তু গুনাহ
কেয়ামত পর্যন্ত থেকে যাবে, কাল কেয়ামতের মাঠে আল্লাহর সামনে  নবীর সামনে কিভাবে মুখ দেখাবে? এ কথা বলে সে মা
নিজের ইজ্জত নিয়ে খালি হাতে ঘরে ফিরে গেল, ঘরে গিয়ে দেখে বাচ্চারা ক্ষুধায় ছটফট
করছে, মাকে প্রশ্নের উপর প্রশ্ন মা খাবার আননি? সবাই নিয়ে এসেছে তুমি কেন আননি?
আমরা ক্ষুধায় মনে হয় মরে যাব, তুমি যদি আমাদেরকে খাবার দিতে না পর তাহলে আমাদেরকে
গলা চিপে মেরে ফেল,  সন্তানের মুখে এসব কথা
শুনে মা দু চোখের পানি ছেড়ে দিলেন, সন্তানের খাতিরে সে মা যুবকের কাছে আবার ছুটে
গেলেন, বলল দয়া কর, আমার সন্তানেরা না খেয়ে মরে যাচ্ছে, তুমি আমাকে কিছু খাদ্য
দাও, আমি েতামাকে অনেক দোয়া করব, কিন্তু যুবক যেনা করার প্রস্তাব এখনও অটল, অবশেষে
মা সন্তানের জীবন বাঁচানোর তাগিদে কিছু খাদ্যের জন্য সে যুবকের প্রস্তাবে রাজি হয়ে
গেল, যুবকের সাথে সে অসহায় মা এক কামরায় চলে গেল,
পর্দানশিন অসহায় মা সন্তানের খাতিরে
জেনার প্রস্তাবে জেনার দরজায় দাঁড়িযে গেল এমন সময় হঠাৎ সে মা্ এর মনে আল্লাহর
প্রিয় হাবিবের একটি ফরমান মনে পড়ে গেল, আল্লাহর প্রিয় নবী এরশাদ করেন যে আল্লাহর
ভয়ে গুনাহ ছেড়ে দেয়, আল্লাহ তাকে এমন স্থান থেকে রিযিকের ব্যবস্থা করে দেন যেখান
থেকে রিযিক পাওয়ার সে চিন্তাও করে না, তাছাড়া হায়াত মওতের মালিক আল্লাহ, এমন কি
সিউরিটি আছে যে আমার বাচ্চাগুলি খাবার দিলেই তারা বেচেঁ যাবে? কত লোক আছে খাবার
খেয়েই মারা যাচ্ছে, তাই জেনার দরজায় গিয়েও হঠাৎ সে মা বলে উঠল হে যুবক খবরদার আমার
গায়ে হাত লাগাবে না, আমার ৩টি সন্তান তারা সবাই যদি ক্ষুধার জ্বালায় মরেও যায় তবুও
আমি আমার আল্লাহর নাফরমানি করতে পারব না।
এ কথা বলে সে মা সেখান থেকে দ্রুত
বের হয়ে গেল, ঘরে গিয়ে সন্তানদেরকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে বসে গেল আর ছেলেদের বলল
কাঁদিও না আল্লাহর উপর ভরসা রাখ, রিযিকের মালিক আল্লাহ , তাকে ডাক তিনি অবশ্যই
আমাদের জন্য কোন ব্যবস্থা করে দিবেন।
মহিলা ঘরে যায়নামাজ বিছিয়ে কেঁদে
কেঁদে দোয়া করতে লাগলেন, হে আল্লাহ তুমি মুখও দিয়েছ নিশ্চয়ই খাবারও দিবে, হে আমার
দয়াল প্রভু আমার সন্তানদের জন্য খাবার দাও,  এসব দোয়া করা শেষ হয়নি, এমন সময় দরজার কড়া নড়ার
শব্দ আসল, মহিলা জায়নামাজ থেকে উঠে দরজা খুলে দেখে সে নওজোয়ান অনেক খাদ্য সামগ্রী
প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র নিয়ে সে গরীব মায়ের দরজায় হাজির, মহিলা তাকে প্রশ্ন করল কি
জন্য এসেছ, সে যুবক বলল আল্লাহর ওয়াস্তে আমাকে মাফ করে দাও, আজ তোমার খোদাভিতি
দেখে আমি অনেক শিখেছি, আমি অন্ধ ছিলাম তোমার আচরন আমার অন্তর চক্ষু খুলে দিয়েছে,
আমি তওবা করেছি, িআমি আজ থেকে আর কোন নারীর প্রতি কু দৃষ্টিতে তাকাবো না,
তখন সে যুবক বলল আজ থেকে তুমি আমার
বোন, আমার পক্ষ থেকে এই তোহফা কবুল করে নাও আর সন্তানদের পেট ভরে খাবার দাও, তখন
সে বোনটি যুবকের জন্য দোয়া করল হে আল্লাহ আজ থেকে এ যুবকের জন্য দুনিয়ার আগুন এবং
জাহান্নামের আগুন হারাম করে দাও,
যুবক তার বন্ধুকে বললেন - সেদিন যে
আমার সে বোনটি আমার জন্য দোয়া করেছে সেদিন থেকে দুনিয়ার কোন আগুন আমাকে জ্বালাতে
পারে না, আমি আশা রাখি জাহান্নামের আগুনও আমাকে স্পর্শ করবে না।
একজন নারী নিজের ইজ্জতকে
আল্লাহর ভয়ে হেফাজত করে তার দোয়াতে এত শক্তি আসে যে সে যার জন্য দোয়া করে তার জন্য
দুনিয়া ও আখেরাতের আগুন হারাম হয়ে যায়। হে আমার জাতীর মেয়েরা আজ থেকে শপথ গ্রহণ কর
উঠ সৈয়্যদা ফাতেমার দামান ধর, মা আয়শার দামান ধর, উম্মে সালমার জজবাকে নিজের মধ্যে
জাগ্রত করে নাও, সৈয়দা জয়নাবের জজবাকে জিন্দা করে নাও, যাতে তোমাদের দেখে জগত বলে
উঠে আজ ১৪শত বছর পরও মুসলমান নারীর যদি এ শান হয় তাহলে ১৪শত বছর আগে নবীজির কন্য
সৈয়্যদা ফাতেমার শান কেমন ছিল?   

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.