জিলহজের প্রথম ১০ দিন নখ চুল না কাটার ফজিলত ও নিয়ম। কাদের জন্য এ আমল করা ...




কুরবানীর মাসে বা জিলহজ্ব মাসে নখ ও চুল কাটা
এ বছর আগামী ২২ জুলাই থেকে হয়ত জিলহজ্ব মাস শুরু হবে, জিলহজ্ব মাসের চাঁদ উঠলে যারা কুরবানী করবেন তারা এবং যারা কুরবানী করবেন না তারা নখ চুল, এবং অন্যান্য অবাঞ্চিত পশম কাটবে কি কাটবে না এ ব্যপারে আজ বিস্তারিত আলোচনা করব।
যারা কুরবানী করবেন তাঁদের ব্যপারে ইবনে মাজাহ শরীফের ৩১৪৯ নং হাদীস
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏ "‏ إِذَا دَخَلَ الْعَشْرُ وَأَرَادَ أَحَدُكُمْ أَنْ يُضَحِّيَ فَلاَ يَمَسَّ مِنْ شَعَرِهِ وَلاَ بَشَرِهِ شَيْئًا
উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যখন (যিলহজ্জ মাসের) প্রথম দশক শুরু হয় এবং তোমাদের কেউ কোরবানী করার ইচ্ছা রাখে, সে যেন তার চুল ও শরীরের কোন অংশ স্পর্শ না করে (না কাটে)।
মুসলিম ১৯৭৭, তিরমিযী ১৫২৩, নাসায়ী ৪৩৬১, ৪৩৬২, ৪৩৬৪, আবূ দাউদ ২৭৯১, আহমাদ ২৫৯৩৫, দারেমী ১৯৪৭, ১৯৪৮, ইরওয়া ১১৬৩, সহীহ আবু দাউদ ২৪৮৮।
আর যারা কুরবানী করবে না তাদের জন্য হাদীস হল
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِرَجُلٍ: أُمِرْتُ بِيَوْمِ الْأَضْحَى عِيدًا جَعَلَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لِهَذِهِ الْأُمَّةِ، فَقَالَ الرَّجُلُ: أَرَأَيْتَ إِنْ لَمْ أَجِدْ إِلَّا مَنِيحَةً أُنْثَى أَفَأُضَحِّي بِهَا؟ قَالَ: لَا، وَلَكِنْ تَأْخُذُ مِنْ شَعْرِكَ، وَتُقَلِّمُ أَظْفَارَكَ، وَتَقُصُّ شَارِبَكَ، وَتَحْلِقُ عَانَتَكَ، فَذَلِكَ تَمَامُ أُضْحِيَّتِكَ عِنْدَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ.
অর্থ : আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাকে কুরবানীর দিবসে ঈদ (পালনের) আদেশ করা হয়েছে। যা আল্লাহ এ উম্মতের জন্য নির্ধারণ করেছেন। এক সাহাবী আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আমার কাছে শুধু একটি মানিহা থাকে (অর্থাৎ অন্যের থেকে নেওয়া দুগ্ধ দানকারী উটনী) আমি কি তা কুরবানী করতে পারি? নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না, তবে তুমি চুল, নখ ও মোঁচ কাটবে এবং নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করবে। এটাই আল্লাহর দরবারে তোমার পূর্ণ কুরবানী বলে গণ্য হবে। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৭৮৯; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৪৩৬৫]
এই ২টি হাদীস এর ১ম হাদীস দ্বারা জানতে পারলাম যারা কুরবানী করবেন তারাও নখ চুল কাটবে না।
আর ২য় হাদীসে জানতে পারলাম যারা কুরবানী করবেন না তারাও জিলহজ্ব মাসের ১০ দিন চুল নখ এসব না কাটলে কুরবানীর দিন কাটলে পূর্ণ কুরবানীর সাওয়াব পাবে।
এখন প্রশ্ন হল এটি করা কি ফরয, ওয়াজিব নাকি মুস্তাহাব? এর উত্তর হল মুস্তাহাব। ফরযও না ওয়াজিবও না।
তবে এখানে একটি মাসায়ালা অবশ্যই মনে রাখতে হবে, শরীরের লোম ও নখ এসব ১ সপ্তাহে কাটা সুন্নত, ১৫ দিন হয়ে গেলে মাকরুহে তানজিহি, ১৫ দিন থেকে বেশী দেরী হতে হতে যদি ৪০ দিন পার হয়ে যায় তাহলে মাকরুহে তাহরীমী অথ্যাৎ হারামের কাছাকাছি কাজ হবে এবং গুনাহগার হবে। সুতরাং কোন ব্যক্তি জিলহজ্ব মাস আসার আগে নখ ও শরীরের লোম কাটেনি ফলে তার ৩৫ দিন হয়ে গেল, এখন জিলহ্জ মাসে আরো ১০ দিন এই মুস্তাহাব আমল করতে গিলে কাটলনা ফলে ৪৫ দিন হয়ে গেল এতে করে তার মুস্তাহাব পালন করতে গিয়ে ৪০ দিন পার হওয়াতে সে মাকরুহে তাহরীমির মত কাজ করে ফেলল তাই সে গুনাহগার হবে।
তাই এই মুস্তাহাব আমল তারাই করতে পারবে যারা জিলহজ্ব মাস আসার আগেই নখ এবং অন্যান্য পশন কেটে সাফ সুতরা হয়েছে। যাদের টাইম ওভার হয়ে গেছে তারা ৪০ দিন পার হওয়ার আগে আগে কেটে নেয়াই উত্তম যদিও তা জিলহজ্ব মাসেই হউকনা কেন।

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ أَنَسٌ وُقِّتَ لَنَا فِى قَصِّ الشَّارِبِ وَتَقْلِيمِ الأَظْفَارِ وَنَتْفِ الإِبْطِ وَحَلْقِ الْعَانَةِ أَنْ لاَ نَتْرُكَ أَكْثَرَ مِنْ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً


হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের জন্য মোচ, নখ কর্তন এবং বগলের চুল ও অবাঞ্ছিত লোম কাটার সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। সেটি হল, যেন তা চল্লিশ দিনের উর্দ্ধে না যায়। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৫৮, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২৯৫]



কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.