বসে নামাজ পড়ার নিয়ম, বসে নামাজ পড়ার ১০টি বিধান, চেয়ারে বসে নামাজের নিয়ম

 

বসে নামাজ পড়ার নিয়ম, বসে নামাজ পড়ার ১০টি বিধান, চেয়ারে বসে নামাজের নিয়ম


 

যে সব লোক বসে বসে নামাজ,পড়েন তারা অবশ্যই জেনে নিন

বাংলাদেশ ভারত পাকিস্তানের অনেক নামাজিরা ফরয সমুহ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পরে, সুন্নত নফল সমুহ বসে বসে পরে, বিশেষ করে এশারের বিতিরের পরের ২ রাকাত সকলেই বসে বসে পড়েন তাদের বসে নামাজ পড়ার ব্যপারে কয়েকটি বিষয় জেনে রাখা দরকার

 

ফরজ ওয়াজিব ও ফজর নামাজের সুন্নতের ব্যপারে বিধান একরকম আর অন্যান্য সুন্নত ও নফলের ব্যপারে বিধান অন্য রকম

                                          প্রথমে আলোচনা করব নফল

ও সুন্নত নামাজ বসে পড়ার ব্যপারে

যাদের কোন ওজর না থাকে, কোন সমস্যা না থাকে তাদের জন্য বিধান হল (আজরুল কায়েদে নিসফা আজরুল কায়েম) হুজুর (দ) ফরমান যে বসে নামাজ পড়বে সে অর্ধেক সাওয়াব পাবে। সক্ষমতা থাকা অবস্থায় যদি কেহ বসে নফল নামাজ পড়ে তাহলে সে অর্ধেক ছাওয়াব পাবে। যেমন মক্কা শরীফের মসজিদুল হারামে যদি কেহ ১ রাকাত পড়ে তাহলে ১ লক্ষ রাকাত সাওয়াব পাবে এখন কেহ যদি বসে বসে পড়ে সে পাবে ৫০ হাজার, আরো ৫০ হাজার তার বিয়োগ হয়ে যাবে।

 

এশারের পর ২ রাকাত বসে পড়ার বিধান

মুলত মানুষ দিনের সব নামাজ দাঁড়িয়ে দাড়িয়ে পড়ে এবং  রাতের এশারের নামাজের পর সুন্নত বিতির সব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পরে, কিন্তু বিতিরের পর যে ২ রাকাত তা বসে বসে পরে,এর ১টা কারন হল হুজুর (দ) রাতে বসে বসে নফল পড়তেন, সে জন্য কিছু আশেক বলেন ছাওয়াব কম হলে কম যেহেতু হুজুর বসে পড়তেন আমরাও বসেই পড়ব।

 

কিন্তু হযরত আয়শা (রা) ফরমান যখন হুজুরের (দ) শরীর বয়সের কারনে ভারী হয়ে গেল, তখন হুজুর (দ) দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে লম্বা লম্বা নফল পড়তে পারতেন না, কেননা হুজুরের তাহাজ্জুদ নামাজ আমাদের মত ছিলনা, আমরাতো পারলে ১ আয়াত দিয়ে ১ রাকাত পড়েই নামাজ শেষ করতে চাই। অথচ হুজুর (দ) তাহাজ্জুদে এক রাকাতে ৮ পারা পড়তেন। আর পড়তেন যেন হিরা মনি মুক্তা ঝরে ঝরে পড়ছে এভাবে তারতিলের সাথে (ওয় রাত্তিলিল কুরআনা তারতিলা) অত্যন্ত সুন্দরভাবে তরতিলের সাথে পড়তেন।

 

তাই হুজুর (দ) ওজরের কারনে শেষ বয়সে রাতের নামাজ বসে পড়েছেন, তবে হুজুর (দ) এর জন্য এটা খাস ছিল যে তিনি বসে পড়লেও উনার জন্য ছাওয়াব পুরা ছিল, অর্ধেক ছিলনা। সুতরাং যদি কারো ওজর না থাকে তাহলে পুরা ছাওয়াবের আশায় দাঁড়িয়ে পড়বেন। কারন আপনি যদি নফল নামাজ বিনা ওজরে বসে পড়েন তাহলে আপনার ছাওয়াব অর্ধেক হয়ে যাবে।

 

ফজরের সুন্নত বসে পড়ার বিধান

 

ফজরের সুন্নতের ব্যপারে ফোকাহায়ে কেরাম বলেছেন যেহেতু ফজরের সুন্নতের ফজিলত বেশী তাই ফজরের সুন্নত ওয়াজিবের কাছাকাছি, তাই ফজরের সুন্নত দাঁড়িয়ে পড়বেন, বিনা ওজরে ফজরের ‍সুন্নত বসে পড়লে হবেনা। বাকী অন্যান যত সুন্নতে মুয়াক্কাদা, সুন্নাতে গাইরে মুয়াক্কাদা, নফল নামাজ আছে তা যদি আপনি বিনা ওজরে বসে বসে পড়েন জায়েজ হবে,এর ফলে আপনি গুনাহগার হবেন না। তবে এসব নামাজ যদি বসে পড়েন তাহলে ছাওয়াব অর্ধেক হয়ে যাবে। সে জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হল এসব নামাজ দাঁড়িয়ে পড়া। কারন আপনাকে যদি কেহ ১টি কাজ দেয় আর বলে যদি তুমি এই কাজটি বসে কর তাহলে ৫০ হাজার টাকা সেলারি দেয়া হবে আর যদি দাঁড়িয়ে কর তাহলে ১ লক্ষ টাকা সেলারি দেয়া হবে, এখন কেহ কি ইচ্ছাকৃত বসে বসে সে কাজ করবে? করবেনা; কারন এতে তার লাভ অর্ধেক। তাই আমাদের উচিত সব ধরনের নামাজ ওজর না থাকলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পড়া।

 

কোন কোন নামাজে দাঁড়ানো ফরয

৫ ওয়াক্তের ফরয নামাজ, ২ ঈদের নামাজ, জুমার ফরয নামাজ, বিতির নামাজ, ফজরের সুন্নত নামাজ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পড়া ফরয, তাই এসব নামাজ যদি ইচ্ছাকৃত বসে বসে পড়ে, কোন ওজর নাই এমনিতেই অলসতার কারনে বসে বসে পড়ে তাহলে তার সে নামাজ হবেনা, সে নামাজ পুনরায় পড়তে হবে, কেননা সে নামাজের ১টি  ফরয কিয়াম বা দাঁড়ানো ছেড়ে দিয়েছে। অনেকে ফরয নামাজের ১ম রাকাত দাঁড়িয়ে পড়ে আর বাকী নামাজ বসে বসে পড়ে যদি সে এমন মজবুর হয় যে অসুস্থ হয় যে দাঁড়াতে পারছেনা তখন তার জন্য ১ রাকাত দাঁড়িয়ে পড়ার পর বাকী নামাজ বসে পড়লে তা জায়েজ হবে।  কিন্তু যদি এমনিতেই অলসতার কারনে বসে বসে পড়ে তাহলে তার সে নামাজ বাতিল হবে, পুনরায় পড়তে হবে।

 

তবে যদি ওজর থাকে যার কারনে দাঁড়াতে পারেনা, জমিনে বসে সিজদা করতে পারেনা এমন অবস্থায় তার জন্য বসে পড়ার অনুমতি আছে।

সার কথা হল

সব ফরয নামাজ, দুই ঈদের নামাজ, জুমার নামাজ, বিতির নামাজ ও ফজরের ২ রাকাত সুন্নত দাঁড়িয়ে পড়া ফরয। বিনা ওজরে বসে পড়লে নামাজ হবেনা।

বাকী যত সুন্নত ও নফল নামাজ আছে তা বসে পড়া যায়েজ তবে বসে পড়লে ছাওয়াব অর্ধেক হয়ে যাবে।

 

 

কোন মন্তব্য নেই

borchee থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.