তাহাজ্জুদ নামাজের ৪টি নিয়ম। Tahajjud Namaz ar Niom
তাহাজ্জুদ নামাজের ৪টি নিয়ম
হযরত মুয়াবিয়া (রা) জীবনে একবার তাহাজ্জুদ কাজা করে ফেলেন, নিদ্রার গভীরতার কারনে উঠতে পারেননি, তিনি অত্যন্ত পেরেশান হয়ে গেলেন এবং সারা দিন এর জন্য কান্না করলেন আর সারাদিনই নফল পড়লেন, কেননা ওলামায়ে কেরাম বলেন যদি কেহ কোন নামাজ এবাদত থেকে বঞ্চিত হয়ে যায় তখন বুঝে নাও যে তোমার দ্বারা কোন আল্লাহর নাফরমানি হয়ে গেছে। যার ফলে সে এই এবাদত হতে মাহরুম হয়ে গেছে।
২য় রাত যখন তিনি তাহাজ্জুদের জন্য উঠবেন বলে ঘুমালেন কিন্তু সময় হওয়ার আগেই কেহ একজন তার পায়ের আঙ্গুল ধরল আর তিনি জাগ্রত হয়ে গেলেন, হযরত মুয়াবিয়া (রা) জেগে গেলেন আর দেখলেন কেহ একজন ঘরের ভিতর, তিনি তাকে প্রশ্ন করলেন তুমি কে আর কেন এখানে এসেছ? সে বলল হুজুর আমি ইবিলীস আপনাকে তাহাজ্জুদের জন্য ডাকতে এসেছি, গতকাল আপনি তাহাজ্জুদের জন্য উঠতে পারেননি ফলে আপনি সারাদিন এত বেশী কান্নাকাটি করেছেন যে আল্লাহ আপনার উপর খুশী হয়ে গেছেন, তাই আজ আমি আপনাকে ডাকতে এসেছি। আর শয়তান ভালো কাজ করলেও তার উদ্দেশ্য কিন্তু মানুষের ক্ষতি করা। দেখুন সাহাবায়ে কেরাম তাহাজ্জুদের জন্য কেমন পাগল ছিল-
আজ আমি তাহাজ্জুদের ৪টি তরিকা জানাব-
আপনি এশার নামাজ পড়ে অজু করে যখন ঘুমাতে চান, জিকির করে শুয়ে যান, তাহাজ্জুদের নিয়ত করে শুবেন।
আল্লাহ তায়ালা ৪টি তরিকা মানুষের জন্য রেখেছেন যদি আপনি অজু করে ঘুমান, জিকির করে ঘুমান, আর আপনি যদি নিয়ত করে ঘুমান যে আমি তাহাজ্জুদ পড়ব, এখন যদি আপনি উঠতে না পারেন তাহাজ্জুদ পড়তে না পারেন তবুও আপনার পদক্ষেপের কারনে - নিয়ত, অজু ও জিকিরের কারনে আল্লাহ তায়ালা আপনার তাহাজ্জুদ না পড়া সত্বেও আপনার নামায়ে আমালে লিখিয়ে দেয়া হবে।
যদি আপনার তাহাজ্জুদের সময় ঘুম না ভাঙ্গার ভয় থাকে তাহলে সুরা কাহাফের আয়াতটি পড়ে বুকে ফুক দিয়ে ঘুমাবেন দেখবেন যথাসময়ে চোখ খুলে যাবে
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ كَانَتْ لَهُمْ جَنَّاتُ الْفِرْدَوْسِ نُزُلًا
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের অভ্যর্থনার জন্যে আছে জান্নাতুল ফেরদাউস। [ সুরা কা’হফ ১৮:১০৭ ]
خَالِدِينَ فِيهَا لَا يَبْغُونَ عَنْهَا حِوَلًا
সেখানে তারা চিরকাল থাকবে, সেখান থেকে স্থান পরিবর্তন করতে চাইবে না। [ সুরা কা’হফ ১৮:১০৮ ]
قُل لَّوْ كَانَ الْبَحْرُ مِدَادًا لِّكَلِمَاتِ رَبِّي لَنَفِدَ الْبَحْرُ قَبْلَ أَن تَنفَدَ كَلِمَاتُ رَبِّي وَلَوْ جِئْنَا بِمِثْلِهِ مَدَدًا
বলুনঃ আমার পালনকর্তার কথা, লেখার জন্যে যদি সমুদ্রের পানি কালি হয়, তবে আমার পালনকর্তার কথা, শেষ হওয়ার আগেই সে সমুদ্র নিঃশেষিত হয়ে যাবে। সাহায্যার্থে অনুরূপ আরেকটি সমুদ্র এনে দিলেও। [ সুরা কা’হফ ১৮:১০৯ ]
قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحَى إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَمَن كَانَ يَرْجُو لِقَاء رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا
বলুনঃ আমি ও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ। অতএব, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার এবাদতে কাউকে শরীক না করে। [ সুরা কা’হফ ১৮:১১০ ]
এই আয়াতগুলী পড়ে যদি নিয়ত করে হে আল্লাহ আমাকে রাত ৪টা বাজে জাগ্রত হওয়ার তৌফিক দিন তাহলে ঠিক ৪টা বাজে জাগ্রত হয়ে যাবেন ইনশা আল্লাহ।
এবার আসুন ২য় নিয়ম জানি- আপনি সেহেরীর সময় উঠবেন এবং ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ পড়বেন এবং ৩ রাকাত বিতির পড়বেন, কেননা বুখারী শরীফের রেওয়ায়েত আম্মাজান আয়শা (রা) বলেন আমি রাসুল (দ) কে রমজান ও গায়রে রমজানে ১১ রাকাত থেকে বেশী পড়েননি।
তবে মনে রাখবেন যদি আপনার ছুটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে আপনি বিতির এশারের পরপর পড়ে নিবেন, আর যদি পূণ বিশ্বাস থাকে সেহেরীর সময় উঠতে পারবেন তখন তাহাজ্জুদের পর পড়ার জন্য রেখে দিবেন।
৩য় নিয়ম হল যদি আপনি দেখেন যে আপনি খুব ক্লান্ত সুতরাং আপনি আজ তাহাজ্জুদের জন্য জাগ্রত হতে পারবেন না, আপনি এশারের নামাজের পরই ২ রাকাত হলেও পড়ে নিবেন তাহলে আল্লাহ আপনাকে তাহাজ্জুদের সাওয়াব দান করবেন, এটা প্রতিদিন নয় বরং যখন কোন ওজর থাকে তখনকার জন্য।
৪থ নিয়ম হল যদি আপনি অজু করে জিকির করে তাহাজ্জুদের নিয়ত করে শুয়ে যান কিন্তু তাহাজ্জুদের সম?য় ঘুম ভাঙ্গলনা, বরং ফজরের সময় ঘুম ভাঙ্গল তখন আপনি ফজরের নামাজ পড়বেন এরপর সুয উদিত হওয়ার ২০ মিনিট পর থেকে জোহরের আগ পযন্ত যদি আপনি ৮ রাকাত পড়েন তাহলে আল্লাহ তায়ালা এই ৮ রাকাত এর প্রতিদান তাহাজ্জুদেরই দান করবেন।
তবে একদল ওলামার মতে তাহাজ্জুদের জন্য ঘুমানো শত, আর আরেকদলের মতে ঘুমানো শত নয়। ওয়াল্লাহু আলামু বিস সাওয়াব
আপনার তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম আর্টিকেলটি সুন্দর হয়েছে
উত্তরমুছুনতাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম
উত্তরমুছুন